আশা হারাবেন না

1 জীবন সবসময় সহজ হয় না

আমরা সবাই অনেক স্বপ্ন, লক্ষ্য, ও আকাঙ্া নিয়ে জীবন যাত্রা শুরু করে থাকি । অনেক উত্তেজনা ও উৎসাহের সাথে আমরা কী করতে চাই, কোথায় যেতে চাই, ও জীবনে কী হতে চাই, সেই নিয়ে অনেক পরিকল্পনা করে থাকি। কিন্তু আমাদের এই যাত্রাপথে একটা বিষয়ে নিশ্চিত যে, আমরা কোনো না কোনো ঝড়ের সম্মুখীন হবো। জীবন সবসময় সহজ হয় না! আমরা প্রায়ই আশা করে থাকি আমাদের জীবন একটি গল্পের বইয়ের মত সরল হবে, কিন্তু সবসময় সেইরূপ হয় না! অপ্রত্যাশিত প্রতিকূলতা, কঠিন পরিস্থিতি আমাদের পথের সামনে এসে দাঁড়ায়। এই সময়গুলিতেই মনে হয় আমাদের লক্ষ্য ও স্বপ্নগুলি যেন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। অনেকসময়, আমরা নিজেদেরকে সম্পূর্ণ আশাহীন পরিস্থিতির মাঝখানে খুঁজে পাই। আমরা আশা হারিয়ে ফেলার মুখে দাঁড়িয়ে থাকি। আমরা প্রায়ই হাল ছেড়ে দিই। আমরা চিন্তা করতে শুরু করি, “আমি কখনই এটা সম্পন্ন করতে পারব না” অথবা “আমি কখনই আমার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব না”। লক্ষ্যে পৌঁছানোর বিষয়ে আমরা হতাশ হয়ে পড়ি।

অনেকসময়, জীবনে অপ্রত্যাশিত মোড় আসে ও এমন পরিস্থিতি এসে দাঁড়ায়, যার জন্য আমরা সম্পূর্ণ ভাবে অপ্রস্তুত থাকি। আমরা পথের শেষে নিজেদের পাই, যেখান থেকে ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনা দেখতে পাওয়া যায় না। আপনাদের মধ্যে অনেকেই, যারা এই পুস্তকটি পড়ছেন, হয়তো কোনো না কোনো আশাহীন পরিস্থিতির মাঝখানে রয়েছেন। সেটা আপনার চাকুরী সংক্রান্ত, অথবা পেশা, শিক্ষা, বাড়ি, বিবাহ, অথবা পরিবার সংক্রান্ত হতে পারে। জীবনে অনেক কিছুই সমস্যাজনক হতে পারে। কিন্ত আমি আপনাকে এই বলে উৎসাহিত করতে চাই যে বাইবেলের ঈশ্বর মৃতদেরকেও জীবন দান করার বিষয়ে দক্ষ_সেই পরিস্থিতি ও পরিবেশকেও যা মৃত ও আশাহীন বলে মনে হয়। তিনি চারপাশের আশাহীন পরিস্থিতিকে পাল্টে দেওয়ার ক্ষেত্রে পারদর্শী । আমেন! আপনার পাশে যদি তিনি থাকেন, তাহলে আপনি আশাহীন পরিস্থিতিতেও আশা ধরে রাখতে পারেন। এমনকি যখন সবকিছু আশাহীন বলে মনে হয়, তখনও আপনি বিজয়ী হতে পারেন। এই পুস্তকটি সহজ-সরল উৎসাহমূলক কথা নিয়ে আসে এবং আশা না হারানোর জন্য আমাদের পরামর্শ দেয়।

আশা ধরে রাখার গুরুত্ব

আশা ধরে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । “আশা” বলতে আমরা বুঝি প্রতীক্ষা, প্রত্যাশা, এমন কিছু যার অপেক্ষায় আমরা থাকি, কোনো আকাঙ্খা, কোনো স্বপ্ন, অথবা কোনো লক্ষ্য। শ্বীষ্টিয় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল প্রত্যাশা । বাইবেল তিনটি বিষয়ের উল্লেখ করে যা আমাদের শ্রী জীবনের চলার পথে গুরুত্বপূর্ণ_তাদের মধ্যে একটি হল প্রত্যাশা ।

1 করিষ্থীয় 13:13

আর এখন বিশ্বাস, প্রত্যাশা, প্রেম এই তিনটি আছে, আর ইহাদের মধ্যে প্রেমই শ্রেষ্ঠ।

2 প্রত্যাশা আমাদের শ্রীষ্টিয় জীবনের এক অপরিহার্য অংশ

বিশ্বাসী হিসেবে, আমরা অনেক বিষয়ের প্রত্যাশা করে থাকি যা পূর্ণ হওয়া এখনও পর্যন্ত বাকি আছে।

অনন্ত জীবনের প্রত্যাশী

আমরা অনন্ত জীবনের প্রত্যাশা করি। যদিও বা আত্মায় আমরা সেই অনন্ত জীবন লাভ করেছি, কিন্তু এটা এমন বিষয় যার অপেক্ষায় আমরা রয়েছি।

গৌরবের আশা

কলসীয় |:27

কারণ পরজাতিগণের মধ্যে সেই নিগৃঢুতত্বের গৌরব-ধন কি, তাহা পবিভ্রগণকে জ্ঞাত করিতে ঈশ্বরের বাসনা হইল; তাহা তোমাদের মধ্যবর্তী শ্রীষ্ট, গৌরবের আশা।

আমাদের মধ্যে শ্রীষ্ট হলেন গৌরবের আশা । তিনি হলেন ভবিষ্যতের জগতে আমাদের জীবনের আশা, এমন এক জগত যা বর্তমানের জগতের থেকে অনেক বেশী উত্তম। আমরা ঈশ্বরের সাথে, স্বর্গে তাঁর উপস্থিতিতে আমাদের সময় অতিবাহিত করার অপেক্ষায় আছি।

পরিত্রাণের আশা

1 থিষলনীকীয় 5:8

কিন্তু আমরা দিবসের বলিয়া আইস, মিতাচারী হই, বিশ্বাস ও প্রেমরূপ বুকপাটা পরি, এবং পরিত্রাণের আশারপ শিরস্ত্রাণ মস্তকে দিই।

। পিতর 1:7-9

7 যে সুবর্ণ নশ্বর হইলেও অগ্নি দ্বারা পরীক্ষিত হয়, তাহা অপেক্ষাও মহামূল্য, তোমাদের বিশ্বাসের পরীক্ষাসিদ্ধতা বীশ শ্রীষ্টের প্রকাশকালে প্রশংসা, গৌরব ও সমাদরজনক হইয়া প্রত্যক্ষ হয়। ৪ তোমরা তাঁহাকে না দেখিয়াও প্রেম করিতেছ; এখন দেখিতে পাইতেছ না, তথাপি তাঁহাতে বিশ্বাস করিয়া অনির্বচনীয় ও গৌরবযুক্ত আনন্দে উল্লাস করিতেছ, 9 এবং তোমাদের বিশ্বীসের পরিণাম, অর্থাৎ আত্মার পরিত্রাণ প্রাপ্ত হইতেছ।

যদিও পরিত্রাণ এখনই শুরু হয়, আমাদের পরিত্রাণের একটি অংশ আছে যার অপেক্ষায় আমরা আছি।

খ্রীষ্টের দ্বিতীয় আগমনের আশা

তীত 2:13

এবং পরমধন্য আশীসিদ্ধির জন্য, এবং মহান ঈশ্বর ও আমাদের ত্রাণকর্তাঁ যীশু শ্বীষ্টের প্রতাপের প্রকাশ প্রাপ্তির জন্য অপেক্ষা করি।

পুনরুখানের প্রত্যাশা

প্রেরিত 24:15

আর ইহারাও যেমন প্রতীক্ষা করিয়া থাকে, সেইরূপ আমি ঈশ্বরে এই প্রত্যাশা করিতেছি যে, ধার্মিক অধার্মিক উভয় প্রকার লোকের পুনরুখান হইবে।

3 প্রত্যাশার গুরুত্ব

আমাদের প্রতিদিনের জীবনে প্রত্যাশা ধরে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাশাহীন পরিস্থিতির মাঝেও আমরা যেন এমন মানুষ হয়ে উঠতে পারি যাদের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রত্যাশা রয়েছে। প্রত্যাশা ধরে রাখা কেন গুরুত্বপূর্ণ, তার অনেকগুলি কারণ রয়েছে।

বিলম্বিত প্রত্যাশী আমাদের অভ্যন্তরীণ মানুষকে দুর্বল করে তোলে

হিতোপদেশ 13:12

আশাসিদ্ধির বিলম্ব হৃদয়ের পীড়াজনক; কিন্তু মনোবাসনার সিদ্ধি জীবনবৃক্ষ।

অনেকসময়ে, প্রত্যাশিত বিষয়গুলিকে লাভ করার ক্ষেত্রে বিলম্ব হয়। আমরা কোনো একটা বিষয়কে একটি নির্দিষ্ট বছরের মধ্যে লাভ করার প্রত্যাশা করি, কিন্ত সেই বছরের শেষেও সেটা ঘটে না। আমরা নিজেদের বলি যে এটা হয়তো পরের বছরে ঘটবে, কিন্তু সেটা নাও ঘটতে পারে। প্রত্যাশিত বিষয়গুলি যত বেশী বিলম্ব হতে থাকে, ততই যেন আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিটি সম্পূর্ণ ভাবে আশাহীন ও দুর্বল হয়ে পড়ে। অপর দিকে, আমাদের প্রত্যাশার বিষয়বস্ত যখন পেয়ে যাই, তখন সেটা আমাদেরকে একটি জীবন বৃক্ষের মত অনুভূতি দিয়ে থাকে । এটি আমাদের শক্তিযুক্ত ও সতেজ করে। আমরা সতেজতা ও নৃতনীকৃত অনুভব করি। আমাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। আমরা অনুপ্রাণিত হই ও এগিয়ে চলতে পারি।

প্রত্যাশী হল আমাদের প্রাণের একটি নোঙ্গর

ইব্রীয় 6:19

আমাদের সেই প্রত্যাশা আছে, তাহা প্রাণের নোঙগরস্বরূপ...

প্রত্যাশা হল আমাদের প্রাণের নোঙ্গর। “প্রাণ” শব্দটি আমাদের মন, ইচ্ছা, ও আবেগকে বোঝায়। জাহাজ থেকে নোঙ্গর ফেলার একটি উপমা এখানে ব্যবহার করা হয়েছে, যেন প্রত্যাশার সাথে আমাদের প্রাণের সম্পর্কটিকে ব্যাখ্যা করা যায়। যখন নোঙ্গর সমুদ্ধের মধ্যে ফেলা হয়, তখন তা ঝড়ের মাঝেও স্থিরতা নিয়ে আসে। বাইবেল বলে যে প্রত্যাশা হল আমাদের প্রাণের নোঙ্গর। এর অর্থ, আমার কাছে যদি প্রত্যাশা না থাকে, তাহলে আমার প্রাণ_আমার মন, আবেগ, ও বুদ্ধি__সেই স্থিরতা ও শক্তি লাভ করবে না যা ঝড়ের মাঝে প্রয়োজন। মানুষ যখন সম্পূর্ণ ভাবে প্রত্যাশা হারিয়ে ফেলে, তখন জীবনের ঝড়গুলি তাদের উপর প্রবল হয়ে ওঠে এবং তারা পথ চলা থামিয়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করে থাকে । তারা হতাশ হয়ে পড়ে ও সহজেই হাল ছেড়ে দেয়। তাদের জীবনে বেঁচে থাকার উদ্দেশ্য আদৌ আছে কিনা, সেই নিয়ে সন্দেহ করতে শুরু করে। আশাহীনতার চিন্তাভাবনা, “কেউ আমার জন্য চিন্তা করে না,” “সবকিছুই ভুল” এবং “এটাকে কখনই সঠিক করা সম্ভব নয়” কথাগুলি তাদের মনকে তোলপাড় করতে থাকে৷ এই পর্যায়ে, অনেকে আত্মহত্যার কথাও ভাবে । সুতরাং, কঠিন থেকে কঠিনতম পরিস্থিতিতেও আশা না হারানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাশা হল আমাদের প্রাণের নোঙ্গর।

প্রত্যাশী হল বিশ্বাসের অগ্রদূত

ইত্রীয় 11:1

আর বিশ্বীস প্রত্যাশিত বিষয়ের নিশ্চয়জ্ঞান, অদৃশ্য বিষয়ের প্রমাণপ্রান্তি।

প্রত্যাশা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ বিশ্বাস প্রত্যাশার উপর নির্ভর করে। প্রত্যাশা বিশ্বাসের আগে আসে। শুধুমাত্র যখন আমরা প্রত্যাশা করতে পারি, তখনই বিশ্বাস আসে। এমন একজন ব্যক্তির কথা বিবেচনা করুন যে মৃত্যুশয্যায় রয়েছে, এবং ডাক্তাররা বলে দিয়েছেন যে চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাছে আর কিছু নেই সাহায্য করার জন্য এবং এই ব্যক্তির কাছে শুধুমাত্র আর কয়েকটা দিন বাঁচার জন্য রয়েছে। সম্ভবত অধিকাংশ মানুষেরা এই অবস্থায় আশা ছেড়ে দেবে। তার শেষ মুহূর্তগুলির চিত্র, তার শেষ কথা, এবং তার অন্ত্েষ্টিক্রিয়ার কথাগুলি তার মনের মধ্যে ঘুরতে থাকবে । যখন কোনো মানুষ আশা ছেড়ে দেয়, তখন বিশ্বাসও কাজ করতে পারে না কারণ “বিশ্বাস এরত্যাশিত বিষয়ের নিশ্চয়জ্ঞান”। যখন কোনো মানুষের মধ্যে সুস্থ হওয়ার কোনো প্রত্যাশাই থাকে না, তখন ঈশ্বরের থেকে আরোগ্যতা লাভের জন্য তাঁকে বিশ্বাস করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস রাখার আগে প্রত্যাশার প্রয়োজন আছে। অসুস্থ ব্যক্তি যেন অন্তত একবার নিজেকে মৃত্যুশয্যা থেকে উঠে আসার একটি চিত্র কল্পনা করে। যদিও বা ডাক্তাররা আশা ছেড়ে দিয়েছেন, সেই ব্যক্তি যেন এই প্রত্যাশা করে যে স্বর্গের ঈশ্বর তাকে সুস্থ করতে পারেন এবং তিনি তা করার জন্য আরও বেশি ইচ্ছুক হবেন। সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার প্রত্যাশা বিশ্বাসকে সক্রিয় করে তুলবে আরোগ্যতা নিয়ে আসার কাজে।

4 ঈশ্বর যিনি আশাহীন পরিস্থিতিকেও পাল্টে দেন

আমাদেরকে বুঝতে হবে যে আমাদের পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, পরিস্থিতি যতই আশাহীন মনে হোক না কেন, একজন ঈশ্বর আছেন যিনি আপনার আশাহীন পরিস্থিতিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষ । আমেন! হতে পারে আপনার বিবাহ, আপনার চাকরী, সন্তান, অর্থনৈতিক অবস্থা, পেশা, অথবা শিক্ষা, অথবা অন্য কিছু আশাহীন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। সেটা যাই হোক না কেন, শুধুমাত্র এই সত্যের উপর লক্ষ্য রাখুন যে আমরা এমন এক ঈশ্বরের আরাধনা ও সেবা করি যিনি আশাহীন পরিস্থিতিকেও পাল্টে দিতে পারেন। এই কারণে আমাদের আশা ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আসুন, বাইবেল থেকে আমরা কয়েকটি চেনাপরিচিত উদাহরণ দেখি যেখানে ঈশ্বর আশাহীন পরিস্থিতিকে পাল্টে দিয়েছেন:

এক দরিদ্ধ মহিলা

সেই মহিলাটির কথা বিবেচনা করুন যার স্বামী মারা গিয়েছিলেন এবং সঙ্গে দুটি পুত্র সন্তান ও অনেক খণ ছেড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন (2 রাজাবলি 4:1-7)। খণদাতারা এসে টাকা চাইছিল ও সন্তানদের ছিনিয়ে নেওয়ার ভয় দেখাচ্ছিল। প্রকৃতপক্ষে এই মহিলার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ রূপে আশাহীন ছিল! তিনি ঈশ্বরের এক দাস, ইলীশায়ের কাছে গেলেন, তার দুরাবস্থার কথা জানালেন, এবং সাহায্য চাইলেন। ভাববাদী জিজ্ঞাসা করলেন যে তার বাড়িতে কী আছে। সেই মহিলা বললেন যে তার কাছে শুধু এক বাটি তেল রয়েছে। ইলীশায় তাকে নির্দেশ দিলেন যেন সেই মহিলা যতগুলি সম্ভব খালি পাত্র জোগাড় করে ও সেখানে তেল ঢালতে থাকে । অলৌকিক ভাবে, তেল পরিমাণে বাড়তে লাগল, এবং প্রত্যেকটি পাত্র তেলে পূর্ণ হয়ে গেল। ইলীশায় তখন সেই মহিলাকে সেই তেল বিক্রি করে সমস্ত খণ পরিশোধ করে, নতুন ভাবে সবকিছু শুরু করতে বলেছিলেন। ঈশ্বর অলৌকিক ভাবে এই মহিলার প্রয়োজন মেটানোর দ্বারা তার আশাহীন পরিস্থিতিকে বদলে দিয়েছিলেন।

বিবাহ ভোজে অলৌকিক কাজ

বিবাহ ভোজের মালিকের ঘরে দ্রাক্ষারস ফুরিয়ে গিয়েছিল-_-অভাবের একটি সরল পরিস্থিতি কিন্তু একটা আশাহীন পরিস্থিতি। তারা যখন চিন্তাভাবনা করছিলেন যে কী করা উচিৎ, তখন মরিয়ম, যীশুর মা বিবাহ ভোজে দাসদের বললেন যে তারা যেন সেই কাজটি করে যা যীশু তাদের করতে বলেন। যীশু তাদেরকে জলের জালাগুলিকে জল দিয়ে পূর্ণ করার নির্দেশ দিলেন এবং তারপর সেখান থেকে কিছুটা পানীয় নিয়ে অতিথিদের পরিবেশন করতে বললেন। জল অলৌকিক ভাবে দ্রাক্ষারসে পরিণত হয়েছিল এবং বিবাহ ভোজে সবাই যথেষ্ট পরিমাণে পান করতে পেরেছিল (যোহন 2:1-11)। যোগান দেওয়ার আরেকটি অলৌকিক ঘটনা! প্রভুর পরামর্শ শোনা এবং সেই মত কাজ করা, আশাহীন পরিস্থিতি পাল্টে দিতে পারে।

এক আশাহীন রাত্রির পর সকাল

একটা ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রভু যীশু যে অলৌকিক কাজ করেছিলেন, ঘটনাটি লৃুক 5 অধ্যায়ে আমাদের জন্য লেখা আছে। পিতর তার ব্যবসায়ের সঙ্গী_যাকোব, যোহন, এবং আন্্রীয়ের সাথে মাছ ধরার ব্যবসায়ে ব্যস্ত ছিলেন। পেশায় তারা ছিলেন জেলে। এক দিন, তারা সমস্ত রাত্রি মাছ ধরার প্রচেষ্টায় ছিলেন, কিন্তু কিছুই তারা ধরতে পারেননি । পরের দিন সকালে, তারা যখন ফিরে আসছিলেন, তখন প্রভু যীশু তাদের সাথে দেখা করলেন। তিনি তাদের নৌকো ব্যবহার করার অনুরোধ জানালেন, যাতে তিনি নৌকো থেকে লোকেদের কাছে প্রচার করতে পারেন। প্রচার করার পর, প্রভু পিতরকে আরও একবার সমুদ্ধের মাঝখানে নৌকো নিয়ে গিয়ে মাছ ধরার জন্য জলে জাল ফেলতে বললেন। পিতর বললেন, “হে নাথ, আমরা সমন রাবি পরিশ্রম করিয়া কিছুমাত্র পাই নাই, কিন্ত আপনার কথায় আমি জাল ফেলিব” (লুক 5:5)। পিতর জানতেন যে তার প্রচেষ্টা কোনো ফল দেয়নি। কিন্তু তবুও তিনি যীশুর কথা শুনে সেই কাজটি আরও একবার করার জন্য প্রস্তুত হলেন।

প্রভুর মুখ থেকে একটা বাক্য একটি আশাহীন পরস্থিতিকে পাল্টে দিয়েছিল। পিতরের বাধ্যতা তার জীবনে “আর্থিক আশীর্বাদ” নিয়ে এসেছিল।

ইত্রায়েল জাতি

ইহুদী লোকেরা কিক্ষিপ্তভাবে সমস্ত পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল। ইহুদী লোকেদের একটা আশাহীনতার অনুভূতি গ্রাস করেছিল। যিহিষ্কেল 37 অধ্যায়ে, ঈশ্বর যিহিষ্কেলকে শুকনো হাড়ের এক উপত্যকা দেখিয়ে ইস্্ায়েলীয়দের দুর্দশাকে বুঝিয়েছিলেন। “পরে তিনি আমাকে কহিলেন, হে মনুষ্য-সম্ভান, এই সকল অহি সমভ ইড্রায়েল-কুল; দেখ, তাহারা বলিতেছে, আমাদের অহি সকল শুষ্ক হইয়া গিয়াছে, এবং আমাদের আশা নষ্ট হইয়াছে; তামরা একেবারে উচ্ছিন হইলাম” (যিহিষ্কেল 37:11)।

ঈশ্বর তখন এই শুকনো হাড়গুলির প্রতি ভবিষ্যদ্বাণী করতে যিহিষ্কেলকে আদেশ করলেন। “এই জন্য তুমি ভাববাণী বল, তাহাদিগকে বল, প্রভ সদা এই কথা কহেন, দেখ, আমি তোমাদের কবর সকল খুলিয়া দিব, হে আমার পজা সকল, তোমাদের কবর হইতে তোমাদিগকে উাপন করিব, এবং তোমাদিগকে ইহ্রায়েল-দেশে লইয়া যাইব” (যিহিক্কেল 37:12)। ভাববাদীর মধ্যে দিয়ে, ঈশ্বর ভবিষ্যদ্বাণী করলেন যে ইহুদী লোকেরা পুনরায় একত্রিত হবে ও ইসরায়েল একটি দেশ হিসেবে পুনরায় স্থাপিত হবে। ঈশ্বর তাঁর বাক্যকে 1948 সালে 14 মে পূর্ণ করলেন, যে দিন ইত্রায়েলকে একটি দেশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। পৃথিবীর সমস্ত স্থান থেকে ইহুদী লোকেরা তাদের নিজেদের দেশে ফেরা শুরু করল।

সুতরাং, আমাদের বিবেচিত যেকোনো আশাহীন পরিস্থিতিকে ঈশ্বর পাল্টে দিতে পারেন। ঈশ্বর “কবরগুলি” খুলে দিতে এবং “শুকনো হাড়গুলিকে” প্রাণ দিতে ইচ্ছুক ও সক্ষম, যাতে পরিস্থিতি পাল্টে যায়! ঈশ্বরের কাছে কোনো কিছুই আশাহীন নয়।

অব্রাহাম ও সারা

অত্রাহাম ও সারার অনেক বয়স হয়ে গিয়েছিল যখন সদাপ্রভু তাদেরকে একটা সন্তান দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। তিনি তাদেরকে এক পুত্র সন্তান দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে এই সন্তানের মধ্যে দিয়ে তাদের আকাশের তারার ন্যায় ও সমুদ্র পাড়ের বালির মত অসংখ্য বংশধর হতে চলেছে। সন্তান ধারণ করার ক্ষেত্রে তারা একটা আশাহীন পরিস্থিতিতে ছিলেন, কারণ এত বছর ধরে তাদের কোনো সন্তান জন্মায়নি। অব্রাহামের বয়স ছিল 99 এবং শুরু থেকেই সারা বন্ধা ছিলেন_-একটা আশাহীন পরিস্থিতি ।

সেই পরিস্থিতি সম্বন্ধে বাইবেল এইরকম কথা বলে:

রোমীয় 4:17,18

17 (যেমন লিখিত আছে, “আমি তোমাকে বহুজাতির পিতা করিলাম,”) সেই ঈশ্বরের নাই, তাহা আছে বলেন। 18 অন্রাহাম প্রত্যাশা না থাকিলেও প্রত্যাশাযুক্ত হইয়া বিশ্বীস করিলেন, যেন 'এইরূপ তোমার বংশ হইবে” এই বচন অনুসারে তিনি বহুজাতির পিতা হন।

অনুসরণ করার জন্য এটা একটি মহান উদাহরণ। অব্রাহাম “গরত্যাশা না থাকিলেও এত্যাশাযুক্ত হইয়া বিশ্বাস কারিলেন”। যখন সেখানে প্রত্যাশা করার কোনো কারণই ছিল না, অন্রাহাম তখনও ঈশ্বরের কথা অনুযায়ী প্রত্যাশায় বিশ্বাস করেছিলেন। আর যেহেতু তিনি প্রত্যাশায় বিশ্বাস করেছিলেন, সেই কারণে “এই বচন অনুসারে তিনি বহুজাতির পিতা” হলেন।

ঈশ্বর যখন আপনাকে কোনো প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন, কখনও বলবেন না, “প্রভু, এই প্রতিশ্রুতিটি হাস্যকর”। এটা হাস্যকর হতে পারে না কারণ আমাদের ঈশ্বর হলেন এমন এক ঈশ্বর যিনি মৃতকেও জীবন দান করে থাকেন। তাই, ঈশ্বর যখন আপনাকে কোনো প্রতিশ্রুতি দেন, তখন আপনার পরিস্থিতি কতটা আশাহীন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। শুধু মনে রাখুন, যে ঈশ্বর আপনার সাথে কথা বলছেন, তিনি একই ঈশ্বর যিনি মৃতদের জীবন দান করেন- শূন্য থেকেও তিনি সৃষ্টি করেন__তিনি যেকোনো পরস্থিতিকে পাল্টে দিতে সক্ষম। ঈশ্বর শুধুমাত্র পরিস্থিতিকে উন্নত করে তোলেন না, তিনি সেটাকে সম্পূর্ণ ভাবে পাল্টে দিতে পারেন! তিনি অস্তিত্বহীন বস্তুকে অস্তিত্বে আনতে পারেন। এখন, আপনার বাড়িতে শান্তি নাও থাকতে পারে কিন্তু ঈশ্বর সেটাকে অস্তিত্বে নিয়ে আসতে পারেন। আপনার দেহের মধ্যে সুস্থতা বর্তমানে অস্তিত্বে নাও থাকতে পারে কিন্তু ঈশ্বর সেটাকে অস্তিত্বে নিয়ে আসতে পারেন। আপনার বাড়িতে, চাকুরীতে, অথবা পেশায় সাফল্য অস্তিত্বে নাও থাকতে পারে কিন্তু ঈশ্বর সেইগুলিকে অস্তিত্বে নিয়ে আসতে পারেন।

5 আশাহীন পরিস্থিতিতেও আশা ধরে রাখার ভিত্তিমূল

আশাহীন পরিস্থিতিতেও আশা ধরে রাখার ভিত্তিমূল কী? এটা কি শুধুই একটা কাল্পনিক বিষয়? এটা কি একটি বস্তু সম্পর্কিত বিষয়ের পরিবর্তে একটি মানসিক সম্পর্কিত বিষয়? এটা কি শুধুমাত্র ইতিবাচক মানসিকতা ধারণ করার একটি বিষয়? এটা কি ইতিবাচক থাকার ও প্রচেষ্টা করার একটা মানবিক প্রচেষ্টা? সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতেও আমরা কেন আশা রাখতে পারি তার কারণ হল, ঈশ্বর এবং তাঁর বাক্য।

রোমীয় 4:18

অব্রাহাম প্রত্যাশা না থাকিলেও প্রত্যাশাযুক্ত হইয়া বিশ্বাস করিলেন, যেন “এইরূপ তোমার বংশ হইবে” এই বচন অনুসারে তিনি বহুজাতির পিতা হন।

ঈশ্বর যা প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, অত্রাহাম সেটাতে বিশ্বাস করেছিলেন, যদিও সেটার উপর বিশ্বাস করার কোনো কারণ ছিল না। যখন পরিস্থিতি আশাহীন ছিল, তখনও তিনি বিশ্বাস করে গিয়েছিলেন। কেন? কারণ ঈশ্বর বলেছেন! তিনি প্রত্যাশায় বিশ্বাস করেছিলেন ঈশ্বরের “বচন অনুসারে”। এটাই ছিল তার প্রত্যাশার ভিত্তিমূল। ঈশ্বর বলেছেন, এবং যদিও পরিস্থিতি আশাহীন ছিল, তবুও সকল আশাহীনতার বিরুদ্ধে গিয়ে অব্রাহাম বিশ্বাস করাকে বেছে নিয়েছিলেন।

ঈশ্বর ও তাঁর বাক্য আমাদের প্রত্যাশীর ভিত্তিমূল

গীতসংহিতা 38:15

কারণ, সদাপ্রভ, আমি তোমারই অপেক্ষা করিতেছি; হে প্রভু, আমার ঈশ্বর, তুমিই উত্তর দিবে।

গীতসংহিতা 130:5

আমি সদাপ্রতুর অপেক্ষা করিতেছি; আমার প্রাণ অপেক্ষা করিতেছে; আমি তাঁহার বাক্যে প্রত্যাশা করিতেছি।

রোমীয় 15:4

কারণ পূর্বকীলে যাহা যাহা লিখিত হইয়াছিল, সেই সকল আমাদের শিক্ষার নিমিত্তে লিখিত হইয়াছিল, যেন শাস্ত্রমূলক ধৈর্য ও সান্তনা দ্বারা আমরা প্রত্যাশী প্রাপ্ত হই।

ঈশ্বর হলেন সেই কারণ, উৎস, এবং আমাদের প্রত্যাশার শক্তি। তাঁর বাক্য হল আমাদের প্রত্যাশার ভিত্তিমূল। কারণ এটা শাস্ত্রের মধ্যে দিয়ে আমাদের হৃদয়ে ধৈর্য ও সান্তনা উৎপন্ন করেছে, যেন আমরা আমাদের প্রত্যাশাকে ধরে রাখি।

ভবিষ্যতের জন্য প্রত্যাশা

আসুন, এতক্ষণ পর্যন্ত আমরা যা কিছু পড়েছি, সেটার ব্যবহারিক দিকটি লক্ষ্য করি। আপনারা যারা এটা পড়ছেন, কেউ বলতে পারেন, “আমাদের কাছে ভবিষ্যতের কোনো প্রত্যাশী নেই” অথবা “আমার মনে হয় না যে আমি অনেক দূর পর্যন্ত এগোতে পারব। আমার জীবনে খুব বেশী কিছু ঘটবে না”। আমি চাই আপনারা জানুন যে ঈশ্বর ও ঈশ্বরের বাক্যের কারণে, আমরা ভবিষ্যতের প্রত্যাশা ধরে রাখতে পারি। তাঁর বাক্যে লেখা আছে:

1 করিষ্থীয় 2:9

কিন্তু, যেমন লেখা আছে, “চক্ষু যাহা দেখে নাই, কর্ণ যাহা শুনে নাই, এবং মনুষ্যের হৃদয়াকাশে যাহা উঠে নাই, যাহা ঈশ্বর, যাহারা তাঁহাকে প্রেম করে, তাহাদের জন্য প্রস্তুত করিয়াছেন।”

আমাদের কাছে ভবিষ্যতের এক প্রত্যাশা রয়েছে। আমরা আশাবাদী যে ভবিষ্যতে কিছু আশ্চর্য বিষয় আমরা দেখতে চলেছি। কেন? কারণ ঈশ্বরের বাক্য বলে যে ঈশ্বর সেই সকল বিষয় তাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন যারা তাঁকে ভালোবাসে ।

যিরমিয় 29:11

কেননা, সদাপ্রভু বলেন, আমি তোমাদের পক্ষে যে সকল সন্কল্প করিতেছি, তাহা আমিই জানি; সেই সকল মঙ্গলের সন্কল্প, অমঙ্গলের নয়, তোমাদিগকে শেষ ফল ও আশাসিদ্ধি দিবার সন্কল্প!

এটাই হল আমাদের প্রত্যাশার ভিত্তিমূল_ ঈশ্বরের বাক্য। তাই, আমরা এক উত্তম ভবিষ্যতের প্রত্যাশা করতে পারি। আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের অন্তিম গন্তব্যের ইঙ্গিত নয়। আমাদের একটা প্রত্যাশা আছে যে আমাদের ভবিষ্যৎ শক্তিশালী, সফল, এবং নিরাপদ হবে সেই প্রতিজ্ঞাগ্তলির কারণে যা তিনি তাঁর বাক্যে করেছেন। আমরা আমাদের বর্তমান পরিস্থিতিকে আমাদের দমিয়ে রাখতে দেবো না।

সফল হওয়ার প্রত্যাশা

আপনাদের মধ্যে কেউ-কেউ নেতিবাচক চিন্তাভাবনা করতে পারেন এবং ভাবতে পারেন যে আপনি কখনও জীবনে সফল হবেন কিনা । আপনারা যা কিছু প্রচেষ্টা করেছেন তার সবকিছুই হয়তো ব্যর্থ হয়েছে এবং আপনি হয়তো এখনও পর্যন্ত সামান্যতমও সফল হতে পারেন নি। ঈশ্বরের বাক্য যা বলে তা আপনাকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে;

গীতসংহিতা 1:1-3

1 ধন্য সেই ব্যক্তি, যে দুষ্টদের মন্ত্রণীয় চলে না, পাপীদের পথে দাঁড়ায় না, নিন্দুকদের সভায় বসে না। 2 কিন্তু সদাপ্রভুর ব্যবস্থায় আমোদ করে, তাঁহার ব্যবস্থা দিবারাত্র ধ্যান করে। 3 সে জলম্বোতের তীরে রোপিত বৃক্ষের সদৃশ হইবে, যাহা যথা সময়ে ফল দেয়, যাহার পত্র ্লান হয় না; আর সে যাহা কিছু করে, তাহাতেই কৃতকার্য হয়।

নিজেকে একটি ফলপ্রসূ গাছের মত দেখুন। নিজেকে এমন একজন মানুষ হিসেবে দেখুন যে সকল কাজেই কৃতকার্য হয়। এটাই হল ঈশ্বরের বাক্য আপনার জীবন সম্পর্কে এবং ঈশ্বর যা আপনার জন্য করতে পারেন, তা কোনো পরিস্থিতিকেই ছিনিয়ে নিতে দেবেন না।

আপনার স্বপ্নগুলিকে সার্থক করার প্রত্যাশা

আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো আপনাদের স্বপ্নগুলিকে সার্থক করার প্রত্যাশা ত্যাগ করেছেন। ঈশ্বরের বাক্য বলে,

গীতসংহিতা 37:4

আর সদাপ্রভূতে আমোদ কর, তিনি তোমার মনোবাঞ্ছা সকল পূর্ণ করিবেন।

আমি এমনও পরিস্থিতিতে পড়েছি যেখানে মনে হয়েছিল যে কখনই আমার স্বপ্নগুলিকে পূর্ণ করতে পারব না। আমার মনে পড়ে, যখন বড় হয়ে উঠছিলাম, বেঙ্গালুরুর শহরে একটি শক্তিশালী মণ্ডলী স্থাপন করার স্বপ্ন দেখেছিলাম যা বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিকেও প্রভাবিত করবে । অনেক কিছু ঘটেছিল এবং আমি নিজেকে এমন পরিস্থিতির মাঝে পেয়েছিলাম যা আমাকে ভাবতে বাধ্য করেছিল যে আমি কখনই আমার এই স্বপ্নটিকে পূর্ণ করতে পারব না। মনে হয়েছিল এটা শুধুমাত্র একটা স্বপ্নই থেকে যাবে। মনে হয়েছিল কখনই আমি এটাতে পা ফেলতে পারব না। যাইহোক, তবুও আমি আমার প্রত্যাশাকে জীবিত রেখেছিলাম কারণ ঈশ্বরের বাক্য বলে যে তিনি আমাকে একটা “ভবিষ্যৎ ও এ্রত্যাশা” দেবেন, এবং তিনি সেই সমস্ত কিছু প্রস্তুত করেছেন যা “চক্ষু যাহা দেখে নাই, কর্ণ যাহা শুনে”। তাঁর বাক্য এটাও বলে যে আমি যদি তাঁর মধ্যে আমোদ করি, তাহলে তিনি আমার হৃদয়ের ইচ্ছাগুলি পূর্ণ করবেন। আমার পরিস্থিতি খারাপ থেকে খারাপতর মনে হলেও তাঁর বাক্য একই ছিল। আমি তাঁর বাক্যে স্থির ছিলাম। তাঁর বাক্য আমার প্রত্যাশার ভিত্তিমূল হয়েছিল। আর এখন আমি এই স্বপ্রটিকে সত্য হতে দেখছি। হাল্লেলুইয়া!

আপনাদের সন্তানদের জন্য প্রত্যাশা

আপনাদের মধ্যে অনেকেই আপনাদের সন্তানদের বিষয়ে আশা হারিয়ে ফেলছেন। যদিও আপনি তাদেরকে ভাল ভাবে প্রশিক্ষিত করেছেন ও ঈশ্বরের বাক্য থেকে শিখিয়েছেন, তবুও, এখন হয়তো তারা জীবনের এমন এক পর্যায়ে আছে যেখানে তারা এমন সব বিষয়ের মধ্যে রয়েছে যা আপনি কখনও কল্পনাও করেননি তারা তাতে প্রবেশ করবে। হয়তো তারা তাদের পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে অথবা মদ্যপান ও মাদক আসক্তিতে পড়ে গিয়েছে। আপনার সব প্রশিক্ষণ যেন বৃথা বলে মনে হয়। আপনার হয়তো মনে হচ্ছে যে এত বছরের পরিশ্রম ব্যর্থ হয়েছে। আপনি হয়তো আপনার সন্তানদের বিষয়ে হাল ছেড়ে দেওয়ার সীমানায় পৌঁছে গেছেন। আমি আপনাদের উৎসাহিত করতে চাই ও বলতে চাই, “আশা ছাড়বেন না”। ঈশ্বরের বাক্য বলে:

গীতসংহিতা 112:1,2

1 তোমরা সদাপ্রভুর প্রশংসা কর। ধন্য সেই জন, যে সদাপ্রতুকে ভয় করে, যে তাঁহার আজ্ঞাতে অতিমাত্র শ্রীত হয়। 2 তাহার বংশ পৃথিবীতে বিক্রমশীলী হইবে; সরল লোকের গোষ্ঠী ধন্য হইবে।

আপনি প্রভুকে বলতে পারেন: “আমি তোমার বাক্যের উপর প্রত্যাশা রাখি। তোমার বাক্য বলে যে আমার সন্তানেরা এই পৃথিবীতে শক্তিশালী হবে”। এর অর্থ আপনার সন্তানেরা এই পৃথিবীতে কিছু একটা হবে। তারা ঈশ্বরের রাজ্যের জন্য কিছু একটা করবে। তারা এই পৃথিবীতে ব্যর্থ হবে না। তারা ঈশ্বরের জন্য প্রভাব বিস্তার করবে।

যিশাইয় 54:13

আর তোমার সন্তানেরা সকলে সদাপ্রতুর কাছে শিক্ষা পাইবে, আর তোমার সন্তানদের পরম শান্তি হইবে।

উপরের এই পদটি যেন আপনার প্রত্যাশার ভিত্তিমূল হয়ে ওঠে। প্রত্যাশা করতে থাকুন। হয়তো বর্তমানে আপনার সন্তান আপনার কথায় কান দিচ্ছে না। তবুও আপনি সকল আশাহীনতার বিরুদ্ধে ঈশ্বরের বাক্যের উপর আশা রাখতে পারেন।

আরোগ্যতার প্রত্যাশা

আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো অসুস্থতা ও রোগের মধ্যে রয়েছেন এবং ডাক্তার হয়তো আপনাকে বলে দিয়েছেন যে আপনার কোনো আশা নেই। এই ক্ষেত্রে ঈশ্বরের বাক্য এটা বলে:

গীতসংহিতা 103:3

তিনি তোমার সমস্ত অধর্ম ক্ষমা করেন, তোমার সমস্ত রোগের প্রতিকার করেন।

এই প্রত্যাশা আপনার কাছে আছে। আপনার প্রত্যাশাকে জীবিত রাখুন। বাইবেল যা বলে, সেই অনুযায়ী নিজেকে সুস্থ ও ভালো হিসেবে কল্পনা করুন:

হিতোপদেশ 3:7,8

7 আপনার দৃষ্টিতে জ্ঞানবান হইও না; সদাপ্রভুকে ভয় কর, মন্দ হইতে দূরে যাও। ৪ ইহা তোমার দেহের স্বাস্থযস্বূপ হইবে, তোমার অস্থির মজ্জাস্বরূপ হইবে।

ঈশ্বরের প্রতি যে সন্ত্রমকারী ভয় রয়েছে, তা আপনার দেহের মধ্যে আরোগ্যতা নিয়ে আসে।

6 একটি আশাহীন পরিস্থিতির মাঝে আমি কী করতে পারি?

রোমীয় 4:17-21

17 (যেমন লিখিত আছে, “আমি তোমাকে বহুজাতির পিতা করিলাম”) সেই ঈশ্বরের নাই, তাহা আছে বলেন। 1৪ অব্রাহাম প্রত্যাশী না থাকিলেও প্রত্যাশাযুক্ত হইয়া বিশ্বীস করিলেন, যেন “এইরূপ তোমার বংশ হইবে” এই বচন অনুসারে তিনি বহুজাতির পিতা হন। ।9 আর বিশ্বাসে দুর্বল না হইয়া, তাঁহার বয়স প্রায় শত বৎসর হইলেও, তিনি আপনার সৃতকল্প শরীর, এবং সারার গর্ভের মৃতকল্পতাও টের পাইলেন বটে, 20 তথাপি ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার প্রতি লক্ষ্য করিয়া অবিশ্বাস বশতঃ সন্দেহ করিলেন না; কিন্তু বিশ্বাসে বলবান হইলেন, 21 ঈশ্বরের গৌরব করিলেন এবং নিশ্চয় জানিলেন, ঈশ্বর যাহা প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, তাহা সফল করিতে সমর্থও আছেন।

কোনো আশাহীন পরিস্থিতির মাঝে আমরা কী করতে পারি যাতে ঈশ্বর সেটাকে পাল্টে দিতে পারেন? অব্রাহামের জীবন থেকে আমরা কী শিক্ষা লাভ করতে পারি? তিনি কী করেছিলেন যার পরিণামে ঈশ্বর তার পরিস্থিতিকে পাল্টে দিয়েছিলেন? বাইবেল বলে যে অব্রাহাম, প্রত্যাশার বিরুদ্ধে, বিশ্বাস করেছিলেন যে তিনি তাই হবেন যা তাকে প্রতিজ্ঞা করা হয়েছিল (রোমীয় 4:18)। আপনি কি বিশ্বাস করবেন যে ঈশ্বর যা কিছু বলেছেন তা ঘটবে? উদাহরণস্বরূপ, ঈশ্বরের বাক্য বলে, “যা কিছু করবে তাতে কৃতকার্য হবে” এবং আপনাকে সেটা বিশ্বাস করতে হবে। আপনি কি বিশ্বাস করবেন?

প্রত্যাশায় বিশ্বাস করুন যে ঈশ্বর যা কিছু বলেছেন, সেই অনুসারে আপনি হবেন

ঈশ্বর এবং তাঁর বাক্য এক। ঈশ্বরের বাক্যের উপর বিশ্বাস হল ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস করা। আপনি যেন সকল আশাহীনতার বিরুদ্ধে বিশ্বাস করেন। সুতরাং, যখন তা সম্পূর্ণ রূপে আশাহীন মনে হয়, তখন আপনি যেন অবশ্যই বিশ্বাস করেন যে আপনি তাই হবেন যা ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেছেন। আশা ছাড়বেন না।

পরিস্থিতির আশাহীনতা যেন আপনার বিশ্বীসকে অসার করে না তোলে

অব্রাহাম “বিশ্বাসে দুরর্ল না হইয়া, তাহার বয়স গায় শত বৎসর হইলেও, তিনি আপনার মৃতকল্প শরীর, এবং সারার গভের মৃতকল্পতাও টের পাইলেন বটে” (রোমীয় 4:19)। অন্রাহাম যখন তার শারীরিক অবস্থা ও পারিপার্শিক পরিস্থিতিকে বিবেচনা করেছিলেন, তখন তিনি তার বিশ্বাসকে দুর্বল হতে দেননি। কোনো পরিস্থিতির আশাহীনতা যেন আপনার বিশ্বাসকে দুর্বল না করে তোলে। চারিদিকে তাকিয়ে এটা বলবেন না, “এটা মেরামতের উধের্ব”।

যাইহোক, এর অর্থ এই নয় যে আপনি আপনার পরিস্থিতিটিকে অস্বীকার করবেন। শুধুমাত্র আপনার পরিস্থিতির বাস্তবতাকে আপনার বিশ্বাসকে দুর্বল করে তুলতে দেবেন না। বরং আপনি যেন আপনার কল্পনার ক্যানভাসে প্রতিজ্ঞা পূর্ণতার একটি চিত্র আঁকেন। উদাহরণস্বরূপ, নিজেকে সম্পূর্ণ রূপে সুস্থ দেখুন, নিজের জীবনে সাফল্যকে দেখুন, আপনার বিবাহকে সুস্থ হতে দেখুন, আপনার সন্তানদের ঈশ্বরের সেবা করতে ও তাঁর পথে চলতে দেখুন। ঈশ্বরের বাক্যের উপর নির্ভর করে এমনই এক চিত্র আঁকুন, এবং প্রায়ই সেটার দিকে তাকান!

একদিন রাব্রে, ঈশ্বর অব্রাহামকে তাম্ুর বাইরে বের করে আনলেন এবং তাকে আকাশের তারাগুলির দিকে তাকাতে বললেন। এবং তিনি তাকে বললেন, “এইরাপ তোমার বংশ হইবে” (আদিপুস্তক 15:5খ)। তখন অব্রাহামের মনের মধ্যে ঈশ্বরের এই প্রতিজ্ঞাটি একটি চিত্র রূপে গেঁথে গিয়েছিল। তিনি তার বংশকে আকাশের অসংখ্য তারাদের মত দেখতে পাচ্ছিলেন। যখনই অব্রাহাম তার শারীরিক অবস্থার দিকে ও তার স্ত্রীর গর্ভের মৃতকল্পতার দিকে তাকানোর প্রবণতা রাখতেন, তখনই তিনি নিজেকে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার কথা স্মরণ করাতেন, যে তিনি তার বংশকে আকাশের তারার মত ও সমুদ্রের বালিকণার মত করবেন।

অনেক বার, আমি কল্পনা করেছি যে হাজার হাজার মানুষের সামনে আমি ঈশ্বরের বাক্যের পরিচর্যা করছি। আমি আমাদের স্থানীয় মণ্তলীকে আমাদের শহরের পাঁচটি ভিন্ন অঞ্চলে, এবং প্রতিটি মণ্ডলীতে হাজার হাজার বিশ্বাসীদের কল্পনা করেছি। তাই, রবিবার সকালে খালি চেয়ারের দৃশ্য আমার বিশ্বাসকে দুর্বল করে তোলে না, কারণ আমার মনের মধ্যে, আমাদের অন্তিম গন্তব্যের চিত্র রয়েছে। আর এখন, প্রতি রবিবার, আমার দৈহিক বাস্তবতায় প্রকাশিত প্রত্যাশাকে আমি দেখি। আপনার বর্তমান পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, অন্তিম গন্তব্যের একটি চিত্র আপনার মনের মধ্যে রাখুন এবং প্রত্যাশা করতে থাকুন।

দৃঢু সঙ্কল্প ও সহ্যশক্তি প্রদর্শন করুন

অব্রাহামের জীবন থেকে আরও একটা বিষয় আমরা লক্ষ্য করি যে তিনি “অবিশ্বাস বশতঃ সন্দেহ করলেন না” (রোমীয় 4:20)। তিনি ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার ক্ষেত্রে হোঁচট খাননি। তিনি দৃঢ় সঙ্কল্প ও সহ্যশক্তি প্রদর্শন করেছিলেন। প্রত্যাশার সাথে, দৃঢ় সঙ্কল্প ও সহ্যশক্তি ধরে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোমীয় 8:25 পদ বলে, “কিন্ত আমরা যাহা দেখিতে না পাই, তাহার গত্যাশা যাদি করি, তবে ধধ্ধ সহকারে তাহার অপেক্ষায় থাকি”। যদিও আমাদের অনেকেই অনেক কিছু নিয়ে প্রত্যাশা করি, তবুও সেইগুলি আমরা মুহূর্তের মধ্যে লাভ করার প্রবণতা দেখাই। অপরদিকে শাস্ত্র আমাদের নির্দেশ দেয় ধৈর্য সহকারে সেই বিষয়গুলির জন্য অপেক্ষা করতে যেগুলি আমরা দেখতে পাই না। সহজে হাল ছাড়বেন না। কিছু ধৈর্য সহকারে অপেক্ষা করুন। প্রেরিত পৌল বলেছেন,

1 থিষলনীকীয় 1:3

আমরা তোমাদের বিশ্বীসের কার্য, প্রেমের পরিশ্রম ও আমাদের প্রভু যীশ্ শ্রীষ্ট বিষয়ক প্রত্যাশার ধৈর্য আমাদের ঈশ্বর ও পিতার সাক্ষাতে অবিরত স্মরণ করিয়া থাকি।

প্রত্যাশা ধৈর্যশীল! প্রকৃত প্রত্যাশা যা ঈশ্বরের বাক্যের উপর নির্ভর করে, সেটা ধৈর্যশীল।

বিলাপ 3:26

সদাপ্রভুর পরিত্রাণের প্রত্যাশা করা, নীরবে অপেক্ষা করা, ইহাই মঙ্গল।

যখন আপনার কাছে প্রকৃত প্রত্যাশা থাকে, তখন সেখানে শান্তি, নীরবতা, ও স্থিরতার একটি অনুভূতি থাকে । আপনি জানেন যে এটা ঘটতে চলেছে। আপনি বিচলিত, উত্তেজিত হন না, এবং নিজের চাহিদাকে লাভ করার জন্য অন্যদেরকে পথ থেকে সরিয়ে দেওয়ার আকাঙ্খা করেন না। বরং আপনি শান্ত থাকেন, কারণ আপনি জানেন যে আপনি যেটাতে বিশ্বাস করেন সেটা অবশ্যই ঘটবে। আপনি দৃঢ় সঙ্কল্প করেছেন ও ধৈর্য সহকারে অপেক্ষা করছেন। অনবরত ঈশ্বরের বাক্যের প্রতি বাধ্য থাকার মধ্যে দিয়ে আপনি আপনার দৃঢ় সঙ্কল্পের প্রমাণ দিয়ে থাকেন। সহজ পথ অবলম্বন করবেন না। এটা বিষয়গুলিকে পরবর্তী সময়ে আরও জটিল করে তুলবে!

আপনার আনন্দকে ধরে রাখুন; ঈশ্বরকে প্রশংসা দিন

অব্রাহাম ঈশ্বরকে প্রশংসা দিয়েছিলেন (রোমীয় 4:20)। যখন আপনার কাছে প্রত্যাশা থাকে, তখন আপনার কাছে আনন্দ থাকে। যেহেতু আপনার কাছে প্রত্যাশা রয়েছে_ ঈশ্বরের বাক্য যা বলে, সেইগুলির উপর-__ আপনি নন্দ করতে পারেন। অনেক সময়ে আপনি আপনার পরস্থিতির কারণে নন্দ করেন। কিন্তু এমনও সময় আসে যখন আপনি প্রত্যাশায় আনন্দ করেন। যাদের ছোট শিশু আছে তারা জানে যে তাদের সন্তানদের জন্মদিন আসার আগে তারা কতটা উত্তেজনাপূর্ণ থাকে! যখন আমাদের মেয়ে, রূত, ছোটবেলায় তার জন্মদিন পালন করত, সে এক সপ্তাহ আগে থেকেই সেই দিনের অপেক্ষায় থাকতো । সে “প্রত্যাশায় আনন্দিত” থাকতো! ার জন্মদিনের ঠিক আগের দিন রাত্রে সে অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ থাকতো এবং বলত, “বাবা, কাল সকালে যখন আমি ঘুম থেকে উঠবো, তখন তুমি আমাকে বলবে, “সুপ্রভাত বার্থডে গার্ল”। পরের দিনের জন্মদিনের পালনের কথা “এখনই” তার মধ্যে আনন্দ নিয়ে এসেছে। এখনও তার জন্মদিন আসেনি, কিন্তু প্রত্যাশার কারণে সে আনন্দিত। শ্বীষ্ট বিশ্বাসী হিসেবে, আমরা প্রত্যাশায় আনন্দিত হই। আমরা আনন্দিত হই যে ঈশ্বর সবকিছু পাল্টে দেবেন এবং আমাদের পরিস্থিতি পরিবর্তন হবে। আমরা প্রত্যাশায় আনন্দিত হই।

রোমীয় 15:13

প্রত্যাশার ঈশ্বর তোমাদিগকে বিশ্বাস দ্বারা সমস্ত আনন্দে ও শান্তিতে পরিপূর্ণ করুন, যেন তোমরা পবিত্র আত্মার পরাক্রুমে প্রত্যাশায় উপচিয়া পড়।

রোমীয় 12:12

প্রত্যাশায় আনন্দ কর, ক্রেশে ধৈর্যশীল হও, প্রার্থনায় নিবিষ্ট থাক।

আমরা প্রত্যাশায় আনন্দিত হতে পারি এবং প্রত্যাশার ঈশ্বর আমাদেরকে আনন্দ ও শান্তিতে পূর্ণ করবেন। আনন্দ ও শান্তি আমাদের জীবনে আসে যখন আমরা বিশ্বাস করি। অনেকসময়ে লোকেরা বচসা ও নালিশ করা শুরু করে যখন তারা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে থাকে। তাদের জীবনে একটা প্রত্যাশার চিত্রের প্রয়োজন আছে। বর্তমান পরিস্থিতি দ্বারা বিচলিত হওয়ার পরিবর্তে, প্রত্যাশার একটি চিত্র বজায় রাখুন। আপনি আনন্দ ও শান্তি অনুভব করবেন, এবং জানবেন যে একদিন সেই চিত্রটি বাস্তবে রূপান্তরিত হবে।

গীতসংহিতা 42:5

হে আমার প্রাণ, কেন অবসন্ন হও? আমার অন্তরে কেন ক্ষুব্ধ হও? ঈশ্বরে প্রত্যাশা রাখ; কেননা আমি আবার তাঁহার স্তব করিব; তিনি আমার মুখের পরিত্রাণ ও আমার ঈশ্বর ।

গীতসংহিতা 71:14

কিন্তু আমি নিরন্তর প্রত্যাশী করিব, এবং উত্তর উত্তর তোমার আরও প্রশংসা করিব।

যখন কোনো একজন প্রত্যাশা রাখে, তখন সে ঈশ্বরের প্রশংসা করার মধ্যে আনন্দ অনুভব করে। হয়তো আপনি যখন এটা পড়ছেন, আপনি হয়তো কোনো আশাহীন পরিস্থিতির মাঝখানে আছেন এবং আনন্দ করো!” কীভাবে আমরা ঈশ্বরকে প্রশংসা দিতে পারি? আমাদের কাছে যে প্রত্যাশা রয়েছে, সেটার কারণে আমরা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে পারি। আজকে বিষয়গুলি খারাপ মনে হতে পারে। আজকে পরিস্থিতি কঠিন হতে পারে। কিন্তু তবুও আপনি তাঁর প্রশংসা করতে পারেন কারণ আপনি জানেন যে এই বিষয়গুলি চিরকাল থাকবে না। বাইবেলের ঈশ্বর হলেন এমন একজন ঈশ্বর যিনি আশাহীন পরিস্থিতিকে পাল্টে দিতে পারেন। আর তিনি আপনার জন্য তা করবেন। আপনার প্রত্যাশাকে জীবিত রাখুন। প্রত্যাশায় বিশ্বাস করুন।

আমরা একটা গান গেয়ে থাকি । এই গানের কথাগুলি অত্যন্ত উৎসাহদায়ক:

ঈশ্বরের প্রশংসা হোক

এলিওট বি. ব্যানিস্টার এবং মাইকেল ভিসেন্ট হাডসন্‌ দ্বারা রচিত

স্তবক।

যখন আপনি কোন সমস্যার সম্মুখীন হন যা আপনার সকল স্বপ্নগুলি চূর্ণ করে এবং যখন আপনার আশাগুলিকে নিষ্ঠুর ভাবে ধ্বংস করা হয় এবং আপনি আপনার নিজের মধ্যে উত্তেজনা অনুভব করেন পার্থিব ভয়ের কাছে নিজেকে সমর্পণ করার তখন আপনি যে বিশ্বাসে দাঁড়িয়ে আছেন, তাকে হারিয়ে যেতে দেবেন না।

কোরাস

ঈশ্বরের গৌরব হোক যারা তাঁর প্রশংসা করে, তিনি তাদের মধ্যে দিয়ে কাজ করেন ঈশ্বরের প্রশংসা হোক কারণ আমাদের ঈশ্বর প্রশংসায় বাস করেন ঈশ্বরের গৌরব হোক কারণ যে শেকল তোমাকে বেঁধে রেখেছিল এটা শুধুমাত্র তোমাকে মনে করায় যে সেইগুলি তোমার পশ্চাতে শক্তিহীন হয়ে পড়ে যখন তুমি তাঁর প্রশংসা করো

স্তবক 2

শয়তান একজন মিথ্যাবাদী সে চায় যে আমরা নিজেদেরকে ভিখারি হিসেবে স্বীকার করি যদিও সে নিজে জানে যে আমরা সেই মহান রাজার সন্তান তাই বিশ্বাসের শক্তিশালী ঢাল তুলে ধরুন কারণ যুদ্ধে জিততেই হবে আমরা জানি যে যীশু শ্রীষ্ট উঠেছেন সুতরাং, কাজটি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে

হয়তো আপনি এই পুস্তকটি পড়ছেন ও বলছেন, “আমি একটা আশাহীন পরিস্থিতিতে রয়েছি”। হয়তো সেটা আপনার বিবাহ, আপনার বাড়ি, সন্তান, অর্থ, চাকুরী, পেশা, অথবা ব্যবসা_এটা জীবনের যেকোনো বিষয় হতে পারে। আমাদের সবাই এই প্রকার পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে থাকি। আমি আপনাদের উৎসাহিত করতে চাই-_আশা হারাবেন না। আশা না হারানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যখন আপনি আশা হারিয়ে ফেলেন, তখন আপনার অভ্যন্তরীণ মানুষটি ক্ষীণ হয়ে পড়ে। যখন আপনি আশা হারিয়ে ফেলেন, তখন আপনি এমন এক জাহাজের মত হন, যার কোনো নোঙ্গর নেই। আপনি ডুবতে শুরু করেন। যখন আপনি আশা হারিয়ে ফেলেন, তখন বিশ্বাসকে কার্যকারী করে তোলা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে কারণ প্রত্যাশা ব্যাতিরেকে বিশ্বাসে চলতে পারবেন না।

ঈশ্বর ও তাঁর বাক্যের উপর প্রত্যাশা রাখুন। আপনার জীবন সম্পর্কে ঈশ্বর যা কিছু বলেছেন তা স্মরণ করুন। আপনার পরিবার ও বিবাহ সম্পর্কে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা কী? যে প্রতিজ্ঞা আপনি পেয়েছেন সেটাকে ধরে থাকুন। তাঁর বাক্যকে আপনার প্রত্যাশার কারণ করে তুলুন। যেহেতু ঈশ্বর বলেছেন, সেই কারণে আপনি প্রত্যাশা রাখতে পারেন যে আপনার পরিস্থিতি বদলাবে । আপনার মনের মধ্যে একটি চিত্র আঁকুন যে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলি পূর্ণ হওয়াটা কেমন দেখতে লাগবে । এটা আপনার প্রত্যাশাকে জীবিত রাখতে সাহায্য করবে।

“পরন্ত, যে শক্তি আমাদের মধ্যে কার্য সাধন করে, সেই শি অনুসারে যিনি আমাদের সম যাচহঞা ও চিন্তার অতীত অতিরিক্ত কর্ম করিতে পারেন” (ইফিষীয় 3:20)।

7 আপনি কি সেই ঈশ্বরকে জানেন যিনি আপনাকে প্রেম করেন?

প্রায় 2000 বছর আগে, ঈশ্বর মানব রূপ ধারণ করে এই জগতে এসেছিলেন। তাঁর নাম হল যীশু । তিনি একটা নিষ্পাপ জীবন যাপন করেছিলেন । যেহেতু যীশু মানব রূপে ঈশ্বর ছিলেন, তিনি যা কিছু বলেছেন ও করেছেন, তার দ্বারা ঈশ্বরকে আমাদের কাছে প্রকাশ রেছেন। যে কথাগুলি তান বলোছলেন, সেইগুলি ঈশ্বরের কথা। সাধন করেছিলেন, সেইগুলি ঈশ্বরের কাজ। এই পৃথিবীতে যীশু অনেক আশ্চর্য কাজ তিনি যে কাজগুলি সাধন করেছিলেন। তিনি অসুস্থদের ও গীড়িতদের সুস্থ করেছিলেন। তিনি অন্ধ মানুষদের দৃষ্টিদান করেছিলেন, বধিরদের শ্রবণশক্তি ফিরিয়ে রোছিলেন এবং প্রত্যেক ধরণের অসুস্থতা ও ব্যা দিয়েছিলেন, খঞ্জদের চলতে সাহায্য ধি সুস্থ করেছিলেন। আশ্চর্য ভাবে কয়েকটি রুটিকে বৃদ্ধি করে ক্ষুধার্তদের খাইয়েছিলেন, ঝড় থামিয়েছিলেন এবং অনেক আশ্চর্য কাজ করেছিলেন।

এই সকল কিছু আমাদের কাছে প্রকাশ করে যে ঈশ্বর উত্তম, যিনি চান যে লোকেরা যেন সুস্থ হয়, সম্পূর্ণ হয়, স্বাস্থ্যকর হয় এবং খুশী থাকে। ঈশ্বর তার লোকেদের প্রয়োজন মেটাতে চান।

তাহলে কেনই বা ঈশ্বর মানব রূপ ধারণ করে আমাদের এই পৃথিবীতে আসার সিদ্ধান্ত নিলেন? যীশু কেন এসে ছিলেন?

আমরা সকলে পাপ করেছি এবং সেই সকল কাজ করেছি যা আমাদের সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের কাছে অগ্রহণীয়। পাপের পরিণাম আছে। পাপ হল ঈশ্বর এবং আমাদের মাঝে একটা দুর্ভেদ্য প্রাচীর। পাপ আমাদের ঈশ্বর থেকে পৃথক করে রেখেছে। এটা আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে জানতে ও তাঁর সাথে এক অর্থপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করতে বাঁধা দেয়। সুতরাং, আমাদের অনেকেই এই শূন্য স্থানটি অন্যান্য বিষয় দিয়ে পূর্ণ করার চেষ্টা করি।

পাপের আরও একটা পরিণাম হল ঈশ্বরের থেকে অনন্তকালের জন্য পৃথক হয়ে যাওয়া। ঈশ্বরের আদালতে, পাপের বেতন মৃত্যু। মৃত্যু হল নরকে যাওয়ার দ্বারা ঈশ্বরের থেকে অনন্তকালীন পৃথকীকরণ।

কিন্তু, আমাদের জন্য একটা সু সংবাদ আছে যে আমরা পাপ থেকে মুক্তি পেতে পারি এবং ঈশ্বরের সাথে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপন করতে পারি। বাইবেল বলে, “কেননা পাপের বেতন মৃত্যু; কিন্তু ঈশ্বরের অনু গ্রহ-দান আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টেতে অনন্ত জীবন” (রোমীয় 6:23 23)। যীশু তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যু দ্বারা সমস্ত পৃথিবীর পাপের মূল্য পরিশোধ করলেন। তারপর, তিন দিন পর তিনি মৃত্যু থেকে বেঁচে উঠলেন, তিনি নিজেকে জীবিত অবস্থায় অনেক মানুষের কাছে দেখা দিলেন এবং তারপর তিনি স্বর্গে চলে গেলেন।

ঈশ্বর প্রেমের ও দয়ার ঈশ্বর । তিনি চান না যে একট মানুষও নরকে শাস্তি পাক। আর সেই কারণে, তিনি এসেছিলেন, যাতে তিনি সমুদয় মানবজাতির জন্য পাপ ও পাপের পরিণাম থেকে মুক্তি পাওয়ার একটা পথ প্রদান করতে পারেন। তিনি পাপীদের উদ্ধার করতে এসেছিলেন_ আপনার এবং আমার মতো মানুষদের পাপ থেকে ও অনন্তকালীন মৃত্যু থেকে উদ্ধার করতে এসেছিলেন।

পাপের এই ক্ষমাকে বিনামূল্যে গ্রহণ করতে গেলে, বাইবেল আমাদের বলে যে আমাদের একটা কাজ করতে হবে-_ প্রভু যীশু শ্ীষ্ট ক্রুশের উপর যা করেছিলেন তা স্বীকার করতে হবে এবং তাঁকেই সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে বিশ্বাস করতে হবে।

“. যে কেহ তাহাতে বিশ্বাস করে, সে তাহার নামের গুণে পাপয়োচন প্রাণ হয়” (প্রেরিত 10:43)। “কারণ তুমি যাদি “মুখে যীশুকে এড বলিয়া স্বীকার কর, এবং 'হদয়ে' বিশ্বাস কর ঘর তাঁথাকে ইগণের মধ হইতে উদযাপন করিয়াছেন, তবে পরিত্রাণ পাইবে” ( 10:9)।

আপনি যদি প্রভু যীশু শ্বীষ্টকে বিশ্বাস করেন, তাহলে আপনিও আপনার পাপের ক্ষমা লাভ করতে পারেন ও শুচিকৃত হতে পারেন।

নিম্নলিখিত একটা সহজ প্রার্থনা রয়েছে যা আপনাকে প্রভু যীশু শ্রীষ্টের উপর বিশ্বাস তথা তিনি ক্রুশের উপর যা করেছেন, তা সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে। এই পরার্থনাটি যীশুর বিষয়ে আপনার অঙ্গীকারকে ব্যক্ত করতে ও পাপের ক্ষমা ও শুচিকরণ লাভ করতে সাহায্য করবে। এই প্রার্থনাটি একটা নির্দেশরেখা মাত্র। এই প্রার্থনাটি আপনি আপনার নিজের ভাষাতেও করতে পারেন।

প্রিয় প্রত যীশু, আজ আমি বুঝতে পেরেছি যে তুমি আমার জন্য ক্রুশের উপর কী সাধন করেছো । তা আমার জন্য মারা গেছ, তুমি তোমার বহ্মুল্য রক্ত সেচন করেছ এবং আমার পাপের মূল্য দিয়েছ, যাতে আমি ক্ষমা লাভ করতে পারি। বাইবেল আমাকে বলে যে কেভ তোমার ভপর বিশ্বাস করবে, সে তার পাপের ক্ষমা লাভ করবে ।

তাজ, তামি তোমাকে বিশ্বাস করার এবং তুমি আমার জন্য যা করেছো, তা এহণ করার একটা সিদ্ধান্ত নিই, এবং বিশ্বাস করি যে তুমি আমার জন্য ক্ুশে মারা গিয়েছ এবং মৃত্যু থেকে প্রুনরথিত হয়েছ। আমি বিশ্বাস করি যে আমি আমার উত্তম কাজ দ্বারা শিজেকে উদ্ধার করতে পারব না, না অন্য কোন মানুষও আমাকে উদ্ধার করতে পারবে । আমি আমার পাপের ক্ষমা অজর্ন করতে পারি না।

তাজ, আমি ত্রামার হৃদয়ে বিশ্বাস করি এবং আমার মুখে স্বীকার করি যে তুমি তমার জন্য মারা গিয়েছ, তুমি আমার পাপের মূল্য দিয়েছ, তুম মৃতদের মধ্যে থেকে উথ্থিত হয়েছ, এবং তোমার উপর বিশ্বাস করার মধ্ো দিয়ে, আমি আমার পাপের ক্ষমা ও শুচিকরণ লাভ করি ।

যীশু তোমাকে ধন্যবাদ । আমাকে সাহাযা কর যেন আমি তোমাকে প্রেম করতে পারি, তোমাকে আরও জানতে পারি এবং তোমার প্রাত বিশ্বর্ত থাকতে পাপ । আমেন।